সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য
বাংলাদেশের পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ অন্যতম আকর্ষণীয় এবং জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ যা কক্সবাজার জেলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। ক্রিস্টাল ক্লিয়ার পানি, সাদা বালুকাবেলা এবং প্রবালের মনোমুগ্ধকর রঙের জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দেশের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়।
কিভাবে যাবেন:
সেন্ট মার্টিনে পৌঁছানোর জন্য প্রথমে কক্সবাজার অথবা টেকনাফ যেতে হবে। সেখান থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রাইভেট এবং সরকারি লঞ্চ ও জাহাজে করে সেন্ট মার্টিন যাওয়া যায়। শীতকালে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের ভিড় থাকে, তাই এই সময় লঞ্চ বা জাহাজের টিকিট আগে থেকেই বুকিং করে রাখা ভালো।
দর্শনীয় স্থানসমূহ:
১. ছেঁড়া দ্বীপ:
সেন্ট মার্টিনের মূল দ্বীপ থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট্ট প্রবাল দ্বীপ ‘ছেঁড়া দ্বীপ’। এটি অনেক পর্যটকদের প্রিয় স্থান। এখানে প্রবালের রঙ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর।
২. নীল সমুদ্রের জলরাশি:
সেন্ট মার্টিনের পানি অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং নীলাভ। এতে আপনি সরাসরি পানির নিচের প্রবাল ও মাছ দেখতে পারবেন, যা অনেক পর্যটককে আকৃষ্ট করে।
৩. নারিকেল বাগান:
সেন্ট মার্টিনে প্রচুর নারিকেল গাছের সমাহার রয়েছে, তাই অনেক সময় এটি "নারিকেল জিঞ্জিরা" নামেও পরিচিত। নারিকেল গাছের সবুজ আচ্ছাদন দ্বীপটিকে আরও সুন্দর করে তোলে।
সেন্ট মার্টিনে থাকার ব্যবস্থা:
সেন্ট মার্টিনে থাকার জন্য অনেক ছোট-বড় রিসোর্ট ও হোটেল রয়েছে। এখানে থাকার জায়গাগুলো বেশিরভাগই সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। তবে শীতকালীন সময়ে ভিড় বেশি থাকে বলে আগে থেকেই বুকিং করে রাখা ভালো।
স্থানীয় খাবার ও রান্না:
সেন্ট মার্টিনে গেলে বিভিন্ন প্রকার সামুদ্রিক মাছের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। এখানে স্থানীয়দের প্রস্তুত করা টাটকা মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি এবং অন্যান্য সামুদ্রিক খাবার অনেক সুস্বাদু।
ভ্রমণের কিছু পরামর্শ:
১. দ্বীপটি ছোট এবং পরিবেশগত সংবেদনশীল হওয়ায় সেখানে প্লাস্টিক বা কোনো বর্জ্য ফেলার আগে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
২. প্রবাল সংরক্ষণে এবং পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. ছেঁড়া দ্বীপ ভ্রমণের সময় জীবনজ্যাকেট ব্যবহার করা উচিত, কারণ সেখানে স্রোত কখনো কখনো বেশ শক্তিশালী হতে পারে।
সেন্ট মার্টিনের এই মনোমুগ্ধকর দ্বীপটি বাংলাদেশের পর্যটন ক্ষেত্রে একটি অন্যতম আকর্ষণ। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিষ্কার নীল জল এবং প্রবালের দৃশ্য সত্যিই অসাধারণ। যারা প্রকৃতি প্রেমী এবং শান্তিপ্রিয়, তাদের জন্য সেন্ট মার্টিনের দ্বীপে একটি ভ্রমণ অবশ্যই মনে রাখার মতো।